শিক্ষার প্রথম ধাপগুলোই নির্ধারণ করে একজন শিক্ষার্থীর চিন্তাধারা, মূল্যবোধ ও সমাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে মাধ্যমিক শিক্ষার যাত্রা শুরু হয়, আর এই স্তরে যেসব বিষয় শিক্ষার্থীদের শেখানো হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ষষ্ঠ শ্রেণি। এই বিষয়টি শুধুমাত্র কিছু তথ্য মুখস্থ করার বিষয় নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
ইতিহাস অংশে শিক্ষার্থীরা শিখে প্রাচীন সভ্যতার উত্থান-পতন, বিভিন্ন কালের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা। এতে করে তারা নিজেদের শেকড় চিনতে শেখে এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ জন্ম নেয়। উদাহরণস্বরূপ, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতার অবদান সম্পর্কে জানা একজন শিক্ষার্থীকে অনুপ্রাণিত করে, তাকে ভবিষ্যতে দেশের জন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখায়।
সামাজিক বিজ্ঞান অংশ শিক্ষার্থীদেরকে বাস্তব জীবনের নানা দিক সম্পর্কে সচেতন করে। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, পরিবেশ, ভৌগোলিক বৈচিত্র্য—এসব বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী চারপাশের জগৎ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পায়। নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা, পরিবেশ রক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে এই বয়সেই শিক্ষার্থীদের সংবেদনশীল করে গড়ে তোলা যায়।
এই বিষয়টিকে আরও কার্যকরভাবে শেখাতে দরকার আকর্ষণীয় শিক্ষা পদ্ধতি। গল্প বলার মাধ্যমে ইতিহাস শেখানো, মানচিত্র ব্যবহার করে ভৌগোলিক অংশ বোঝানো, গ্রুপ ডিসকাশন বা ছোট নাটকের মাধ্যমে সামাজিক ইস্যুগুলোর ব্যাখ্যা—এসব উপায় শিক্ষার্থীদের শেখাকে আনন্দদায়ক ও বাস্তবমুখী করে তোলে।
এছাড়াও, শিক্ষক ও অভিভাবকদের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন দক্ষ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারেন, আর অভিভাবকরা বাড়িতে অনুশীলনের পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারেন।
সবশেষে, বলা যায় যে ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ষষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষার্থীদের জীবনের সেই গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখান থেকে শুরু হয় চিন্তার জগতের সম্প্রসারণ এবং দায়িত্বশীল ভবিষ্যৎ গড়ার প্রস্তুতি। এই বিষয়ে যত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে, তত বেশি করে গড়ে উঠবে সৎ, সচেতন ও দায়িত্বশীল প্রজন্ম।